পীরগঞ্জ উপজেলার নামকরণ এর কারণ ও সময়কাল নিয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত কোন ইতিহাস না থাকলেও অধিকাংশের মতে এই জনপদে সুলতানি আমলে ইসলাম ধর্ম প্রচার এবং ইসলামী ধ্যান-ধারণার গোড়াপত্তন হয়েছিল পীর মাশায়েখ সমাজের সাধক পুরুষ হযরত পীর সিরাজউদ্দিন আউলিয়া সাহেবের হাত ধরে। সমসাময়িক অনেক পীর আউলিয়া পীরগঞ্জে ধর্ম প্রচারের জন্য আসেন। তাদের মধ্যে অন্যতম দুর্লভপুর গ্রামের পীর বাহারানা সৈয়দ, সাটিয়া গ্রামের পীর শাহজাহী, ভেলাতৈড় গ্রামের পীর দরবারগাজী এবং পীরগঞ্জ সংলগ্ন গোগর গ্রামের বনপীর। পীর-মাশায়েখ ও আউলিয়াগণের পদচারণায় মুখরিত এ জনপদ সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী হতে শুরু করে। পীর আউলিয়াগণের এ অঞ্চল পরিচিতি পেতে থাকে পীরগঞ্জ নামে। তবে নামকরণের এই ভিত্তির বিষয়ে জনশ্রুতি ছাড়া সঠিক ইতিহাস এর সন্ধান পাওয়া যায়না। পীরগঞ্জ প্রশাসনিকভাবে থানা হিসেবে গঠিত হয় ১৮৭০ সালে এবং ১৯৮৩ সালের ৭ ই নভেম্বর এটি উপজেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
এটি স্বীকৃত যে ঠাকুরগাঁও অঞ্চল সুপ্রাচীন ইতিহাসে সমৃদ্ধ একটি জনপদ। কতিপয় ইতিহাসবিদের মতে এ অঞ্চলেই রচিত হয়েছিলো চর্যাপদের কয়েকটি পদ। ইতিহাস সমৃদ্ধ এ জনপদটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে প্রাচীন সভ্যতার বহু মূল্যবান নিদর্শন। উপমহাদেশে মুসলমানদের আগমনের প্রাক্কালে এ অঞ্চলেও অনেক পীর, আউলিয়া, দরবেশ ধর্মসাধক ও ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে চলে আসেন। পীরগঞ্জ অঞ্চলের ইসলাম ধর্ম প্রচারকদের মধ্যে পীর সিরাজউদ্দীন অন্যতম। হাজী মো: দানেশ এর নেতৃত্বে এ উপজেলার শোষিত ও নিপীড়িত গণমানুষ তেভাগা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলো। ১৯৭১ মহান মুক্তিযুদ্ধে সারাদেশের ন্যায় এ উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী সাধারণ মানুষ হানাদার পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলো। ১৯৭১ এর ১৭ এপ্রিল পাক সেনারা ভাতারমারী ফার্ম সংলগ্ন সড়কে অনেক নিরীহ বাঙালীকে হত্যা করেছিলো। দীর্ঘ প্রতিরোদ শেষে ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর পীরগঞ্জ উপজেলা শত্রুমুক্ত ও স্বাধীন হয়।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS